কার্ডিওলজি ডেস্ক
জয়িতা রহমান ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করছেন। পড়ালেখার চাপের পাশাপাশি তার পারিবারিক, অর্থনৈতিক ও দৈনন্দিন দিনের বিভিন্ন সমস্যা ও প্রতিকূলতার সম্মুখীন হন। ফলে তাকে দেখলে বিষন্ন ও উদাসীন মনে হয়।
সমস্যা টা হয়, প্রায়ই তাকে অন্যের উপর চটে যেতে দেখা যায়। এছাড়া তার শারীরিক ও মানসিক প্রফুল্ল থাকার অবস্থা তা তো একদমই দেখা যায় না। যে কেউই বলবে যে সে বেয়াদব, বদমেজাজি ও হৃদয়হীন একজন। তবে তার এ ব্যবহারের পিছে যে কে আসলেই দায়ী তা উপেক্ষা করা যাবে না।
জয়িতা রহমানের মতো আমরাও আজ এই স্ট্রেস জনিত সমস্যায় জর্জরিত। দীর্ঘমেয়াদী স্ট্রেস শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। এই উপেক্ষিত রোগ জয়িতা রহমানের আধুনিক জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
স্ট্রেস হরমোন শরীরের স্ট্রেস এর সেন্সর ও লোড দুটিরই ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যখন কেউ স্ট্রেস অনুভব করেন, তখন কর্টিসল হরমোনগুলি নিঃসৃত হয়। যা হৃৎস্পন্দন বৃদ্ধি, রক্তচাপ বৃদ্ধি এবং পেশী উত্তেজনা বাড়ায়।
তাই স্ট্রেস হরমোনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ কারণ মাত্রারিক্ত হলেই দেখা দেয় বিভিন্ন শারীরিক ও মানসিক সমস্যা। হৃৎপিণ্ডের উপর এর বিরূপ প্রভাব অনেক গুরুতর।
স্ট্রেস হরমোন নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য কিছু কার্যকর উপায়:
ব্যালেন্সড ডায়েট:
স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া স্ট্রেস হরমোন নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রচুর ফল, শাকসবজি, শস্য এবং লিন প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খান। প্রক্রিয়াজাত খাবার, চিনিযুক্ত পানীয় এবং অতিরিক্ত ক্যাফেইন এড়িয়ে চলুন।
পর্যাপ্ত ঘুম:
ঘুম স্ট্রেস কমানোর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রতি রাতে ৭-৮ ঘন্টা ঘুমের চেষ্টা করুন। ঘুমের সময়সূচী নির্ধারণ করে তা নিয়মিত মেনে চলুন। শোবার ঘর শান্ত ও অন্ধকার রাখুন।
ক্যাফেইন কম খাওয়া:
অতিরিক্ত ক্যাফেইন গ্রহণ স্ট্রেস হরমোনের মাত্রা বাড়াতে পারে। তাই আপনার ক্যাফেইন টলারেন্স অনুযায়ী কফি ও চা পান করুন।
ইয়োগা করা:
ইয়োগা শরীর ও মনকে শিথিল করতে সাহায্য করে। নিয়মিত ইয়োগা অনুশীলন করুন। স্ট্রেস হরমোনের মাত্রা কমে আসবে।
ওমেগা–থ্রি যুক্ত খাবার খাওয়া:
ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো এবং স্ট্রেস হরমোন কমাতে সাহায্য করে। মাছ, বাদাম এবং বীজের মতো ওমেগা-থ্রি সমৃদ্ধ খাবার খান।
টিপস:
১. নিয়মিত ব্যায়াম করুন।
২. ধ্যান বা গভীর শ্বাসের ব্যায়াম অনুশীলন করুন।
৩. প্রিয়জনের সঙ্গে সময় কাটান।
৪. প্রয়োজনে একজন থেরাপিস্টের সাথে কথা বলুন।