বিশ্ব উচ্চ রক্তচাপ দিবস (11)
Health & Wellness

বিশ্ব উচ্চ রক্তচাপ দিবস উপলক্ষে বিএসএমএমইউতে জনসচেতনতা মূলক র‍্যালি ও আলোচনা সভা

বিশ্ব উচ্চ রক্তচাপ দিবস (11)

১৮ মে শনিবার বিশ্ব হাইপারটেনশন ডে উপলক্ষে বাংলাদেশের জনসাধারণকে সচেতন এবং উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে সর্বোত্তম পদ্ধতি প্রচারের লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (BSMMU) দিনভর কর্মসূচির আয়োজন করে। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক। সভাপতি ছিলেন প্রতিষ্ঠানের কার্ডিওলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. চৌধুরী মেশকাত আহমেদ। আয়োজনটি সঞ্চালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্ডিওলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. এস এম মোস্তফা জামান।

বিশ্ব উচ্চ রক্তচাপ দিবস (9)

দিনের শুরু হয় সকাল ৮টায় জনসাধারণের উপস্থিতিতে জনসচেতনতা মূলক র‌্যালির মাধ্যমে। এই রেলির উদ্দেশ্য ছিল সবাইকে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের গুরুত্ব সম্পর্কে অবগত করা।

হাইপারটেনশন, যা সাধারণত উচ্চ রক্তচাপ নামে পরিচিত, যা একটি ক্রমবর্ধমান সমস্যা, বিশেষ করে শহরের এলাকাগুলোতে যেখানে নিষ্ক্রিয় জীবনযাপন এবং অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস দেখা যায় সেখানে এই রাগের প্রাদুর্ভাব বেশি দেখা যায়। এই প্রেক্ষাপটে, সচেতনতামূলক এই পদক্ষেপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

অধ্যাপক ডাঃ এ.বি.এম. আবদুল্লাহ
অধ্যাপক ডাঃ এ.বি.এম. আবদুল্লাহ

র‍্যালির পর সকাল সাড়ে এগারোটায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্লক এ অডিটরিয়ামে বিশিষ্ট হৃদরোগ বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গবেষণা সভা শুরু হয়। উদ্বোধনী আলোচনা করেন এমিরিটাস অধ্যাপক ডাঃ এ.বি.এম. আবদুল্লাহ। তার বক্তব্যে তিনি উচ্চ রক্তচাপ পরিচালনার জন্য একটি সামগ্রিক পদ্ধতির তাৎপর্যের ওপর জোর দিয়েছেন। তিনি কেবল ঔষধের উপর নির্ভর না করে স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন, নিয়মিত ব্যায়াম এবং ধূমপান পরিহারের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন। অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপের ফলে কিডনি, হৃদযন্ত্র, মস্তিষ্ক ও চোখের রোগের ঝুঁকি বাড়ে সে বিষয়েও সতর্ক করেন অধ্যাপক আবদুল্লাহ।

উপাচার্য অধ্যাপক ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক
উপাচার্য অধ্যাপক ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক

 

প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত উপাচার্য অধ্যাপক ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক চমৎকারভাবে উপস্থাপন করেন, যেখানে তিনি ‘হাইপারটেনশন’ শব্দটির মূল বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি ‘হাইপারটেনশন’ শব্দটির মধ্যে ‘টেনশন’ (মানসিক চাপ) শব্দটির উপস্থিতি উল্লেখ করে মানসিক চাপ এবং এই ব্যাপক সমস্যার মধ্যে সম্পর্কের ওপর জোর দেন। অধ্যাপক হক বর্তমান সমাজের প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন, যেখানে শারীরিক কার্যকলাপের অভাব, চাপযুক্ত কর্ম পরিবেশ এবং অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস শহরের সমাজে হাইপারটেনশন বৃদ্ধির কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেন। তিনি জনসাধারণকে সচেতন করার কর্মসূচির গুরুত্বের ওপরও গুরুত্ব আরোপ করেন।

সভায় বাংলাদেশ ও ভারতের খ্যাতনামা হৃৎপিণ্ডবিদগণ তাদের মতামত উপস্থাপন করেন। ডাঃ ভারত বিজয় পুরোহিত, কার্ডিওলজি বিভাগের প্রধান, অধ্যাপক ডা. চৌধুরী মেসকাত আহমেদ এবং মূল প্রবক্তা অধ্যাপক ডা. জাহানারা আরজু শ্রোতাদের সামনে তাদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। সম্মানিত চিকিৎসকগন উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে সর্বোত্তম পদ্ধতি সম্পর্কে মূল্যবান পরামর্শ ও নির্দেশনা প্রদান করেন।
সুসংগঠিত কার্যক্রমের মাধ্যমে BSMMU সফলভাবে জরুরি জনস্বাস্থ্য সমস্যার মোকাবিলা করে আসছে। জনসচেতনতায় রেলি ও সভা কেবল সাধারণ মানুষকে সচেতন করতেই কাজে আসে নি, বরং স্বাস্থ্যকর্মীদের উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ ও চিকিৎসকদের মধ্যে হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য উন্নয়নে কার্যকর পদ্ধতি ও সর্বশেষ জ্ঞান নিয়ে আলোচনার সমাপ্তি ঘটে।

জনসচেতনতা মূলক র‌্যালি ও আলোচনা সভার আয়োজক ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্ডিওলজি বিভাগ। আয়োজনের পৃষ্ঠপোশকতায় ছিল রেনাটা পিএলসি। তাদের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন রেনাটা পিএলসি এর মার্কেটিং ম্যানেজার জনাব আল ইসতিয়াক উর রহমান।