“হার্টের ব্যথা বুকের কোন পাশে হয়?” এই প্রশ্নটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত, হার্টের ব্যথা বুকের বাম পাশে অনুভূত হয়, কিন্তু এটি সবসময় নিশ্চিত নয়। হার্ট অ্যাটাকের সময় ব্যথা মাঝে মাঝে ডান পাশেও হতে পারে বা মাঝখানে বুকের বাম পাশে হতে পারে। তাই, হৃদরোগ নির্ণয়ে ব্যথার অবস্থান একটি সীমাবদ্ধ নির্দেশক হিসেবে কাজ করে।
হার্টের ব্যথা সাধারণত বুকের মাঝখানে শুরু হয়ে বাম হাত, কাঁধ, গলা, চোয়াল এবং পিঠে ছড়িয়ে পড়ে। এই ব্যথা অনেক সময় ভারী বা চেপে ধরার মতো অনুভূত হয়, যেন বুকের উপর কোনো ভারী বস্তু চাপা দেওয়া হচ্ছে। এই ব্যথা কয়েক মিনিট থেকে কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত থাকতে পারে এবং এটি বিশ্রাম নেওয়া বা নাইট্রোগ্লিসারিন গ্রহণ করার পর কমতে পারে।
হার্টের ব্যথা হওয়ার কারণ:
হার্টের ব্যথা বিভিন্ন কারণে হতে পারে, যেমন:
১. ইস্কেমিক হৃদরোগ (Ischemic Heart Disease): এই অবস্থায় হার্টের মাংসপেশিতে রক্ত প্রবাহ হ্রাস পায়, যা বুকে চাপ এবং ব্যথা সৃষ্টি করে।
২. মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশন (Myocardial Infarction): এটি সাধারণত ‘হার্ট অ্যাটাক’ নামে পরিচিত। হার্টের মাংসপেশিতে রক্ত প্রবাহ একেবারে বন্ধ হয়ে গেলে এই ধরনের ব্যথা হয়।
৩. অ্যানজাইনা (Angina): এই অবস্থায় বুকের ব্যথা হয়, যা সাধারণত শারীরিক পরিশ্রম বা মানসিক চাপের সময় বেড়ে যায়। এটি হার্টে অপর্যাপ্ত রক্ত প্রবাহের ফলে হয়।
৪. হাইপারটেনশন (Hypertension): উচ্চ রক্তচাপের কারণে হার্টের উপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে, যা বুকের ব্যথার কারণ হতে পারে।
৫. হার্ট মাসল ডিজিজ (Heart Muscle Disease): হার্টের মাংসপেশির রোগ, যেমন কার্ডিওমায়োপ্যাথি, বুকের ব্যথা সৃষ্টি করতে পারে।
৬. হার্ট ভালভ ডিজিজ (Heart Valve Disease): হার্টের ভালভের সমস্যা বুকের ব্যথার কারণ হতে পারে।
তবে, বুকে ব্যথা শুধুমাত্র হার্টের সমস্যার জন্যই নয়, অন্যান্য কারণেও হতে পারে। যেমন: মাংসপেশির টান, হাড়ের সমস্যা, অ্যাসিড রিফ্লাক্স, পাকস্থলীর সমস্যা, বা ফুসফুসের সমস্যা। এই সব কারণের মধ্যে ব্যথা হার্টের ব্যথার থেকে আলাদা হতে পারে, যেমন ধরণে, অবস্থানে এবং ব্যথার স্থায়িত্বে।
হার্টের ব্যথার লক্ষণ:
সম্ভাব্য হার্টের ব্যথার লক্ষণগুলো হল:
- বুকে চাপা বা পিষে ধরার মতো অনুভূতি
- ব্যথা যা বাহু, কাঁধ, গলা, জিভ, দাঁত বা চোয়ালে ছড়িয়ে যায়
- ঘাম
- অস্বস্তি
- বমি বমি ভাব
- শ্বাস কষ্ট এবং অস্থিরতা।
যেকোনো ব্যক্তির যদি হঠাৎ বুকে ব্যথা অনুভূত হয় তাহলে অবশ্যই অবিলম্বে চিকিৎসার জন্য যাওয়া উচিত। হার্টের ব্যথা সঠিক নির্ণয় ও চিকিৎসার মাধ্যমে অনেক জীবনরক্ষাকারী হতে পারে। সময়মতো সঠিক নির্ণয় এবং চিকিৎসা প্রদান করা গুরুত্বপূর্ণ, কারণ হৃদরোগ যেকোনো সময় জীবনহানিকর হতে পারে।
শেষ কথা, স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা, যেমন নিয়মিত ব্যায়াম, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাস, ধূমপান পরিহার এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা, হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস করতে পারে। হার্টের ব্যথা অনুভূত হলে, চিকিৎসকের পরামর্শ অবশ্যই নেওয়া উচিত।
হার্ট সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানতে – Cardiology Bangladesh ভিজিট করুন ।