প্রতি বছর ১৭ মে বিশ্বজুড়ে পালিত হয় বিশ্ব উচ্চ রক্তচাপ দিবস (World Hypertension Day)। এই দিনের উদ্দেশ্য হলো হাইপারটেনশন সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা এবং মানুষকে রক্তচাপ পরিমাপ ও নিয়ন্ত্রণে উদ্বুদ্ধ করা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশন বিশ্বের প্রায় ১.৪ বিলিয়ন মানুষের একটি নীরব ঘাতক রোগ। এটি হৃদরোগ, স্ট্রোক, কিডনি বিকল, চোখের সমস্যা এবং মৃত্যুর অন্যতম কারণ। এই নিবন্ধে আমরা জানব উচ্চ রক্তচাপের
উচ্চ রক্তচাপ কী?
উচ্চ রক্তচাপ তখনই হয় যখন রক্ত ধমনির মধ্যে স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি চাপ সৃষ্টি করে। এটি দীর্ঘদিন অব্যাহত থাকলে হৃদপিণ্ড ও অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গের ওপর চাপ পড়ে এবং নানা জটিলতা সৃষ্টি হয়।
👉 স্বাভাবিক রক্তচাপ: ১২০/৮০ mmHg 👉 উচ্চ রক্তচাপ: ১৪০/৯০ mmHg
উচ্চ রক্তচাপের প্রধান কারণসমূহ
বংশগত কারণ (Genetics) : যাদের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে হাইপারটেনশন রয়েছে, তাদের ঝুঁকি বেশি থাকে।
বয়স বৃদ্ধির সাথে ঝুঁকি বৃদ্ধি : ৪০ বছর বয়সের পর রক্তনালির স্থিতিস্থাপকতা কমে যায় এবং রক্তচাপ বাড়ার সম্ভাবনা থাকে।
লিঙ্গ : পুরুষদের মধ্যে কম বয়সে হাইপারটেনশন বেশি দেখা যায়। নারীদের ক্ষেত্রে মেনোপজ পরবর্তী সময়ে ঝুঁকি বাড়ে।
অতিরিক্ত লবণ গ্রহণ : WHO অনুযায়ী, দৈনিক ৫ গ্রাম বা তার কম লবণ গ্রহণ করা উচিত। বেশি লবণ রক্তনালির চাপ বাড়িয়ে দেয়।
অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস : চর্বিযুক্ত খাবার, প্রক্রিয়াজাত খাবার ও চিনি বেশি খেলে রক্তচাপ বাড়তে পারে, তামাক ও অ্যালকোহল রক্তনালিকে সংকুচিত করে এবং চাপ বাড়ায়।
মানসিক চাপ : দীর্ঘস্থায়ী মানসিক চাপ বা উদ্বেগ উচ্চ রক্তচাপের অন্যতম কারণ
স্থূলতা ও অতিরিক্ত ওজন : বডি মাস ইনডেক্স (BMI) যদি ২৫ এর বেশি হয়, তাহলে হাইপারটেনশনের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
এছাড়াও ডায়াবেটিস, কিডনি রোগ ও হরমোনজনিত সমস্যা (যেমন হাইপোথাইরয়েডিজম) উচ্চ রক্তচাপের সহায়ক কারণ।
হাইপারটেনশন উপসর্গ সাধারণত দেখা যায় না। তবে নিচের লক্ষণগুলো থাকলে পরীক্ষা করুন:
মাথাব্যথা
মাথা ঘোরা
বুকে চাপ
ক্লান্তিভাব
দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা
উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধ করা সম্ভব — প্রয়োজন শুধু সচেতনতা, সঠিক অভ্যাস ও চিকিৎসকের পরামর্শ।
আজই আপনার রক্তচাপ পরীক্ষা করুন। আপনার সচেতনতাই হতে পারে একটি সুস্থ জীবনের সূচনা।