Leonardo Phoenix Heart failure or heart failure is a condition 2
Featured Health & Wellness

হার্ট ফেইলিউর: হৃদপিণ্ডের অক্ষমতা এবং এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব

Leonardo Phoenix Heart failure or heart failure is a condition 2

হার্ট ফেইলিউর এবং এর বিভিন্ন জটিলতা

হার্ট ফেইলিউর, বা হৃদপিণ্ডের অক্ষমতা, এমন একটি অবস্থা যেখানে হৃদপিণ্ড পর্যাপ্ত রক্ত পাম্প করতে পারে না, ফলে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে রক্ত ও অক্সিজেন পৌঁছাতে সমস্যা হয়। এই অবস্থাটি সাধারণত ধীরে ধীরে উন্নতি লাভ করে এবং দীর্ঘমেয়াদে শরীরের অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকেও ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। হার্ট ফেইলিউরের কারণে শরীরের স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা ব্যাহত হয়, এবং বিভিন্ন জটিলতা দেখা দিতে পারে যা আপনার বয়স, স্বাস্থ্যের অবস্থা এবং হৃদরোগের তীব্রতার উপর নির্ভর করে।

এটি একটি মারাত্মক স্বাস্থ্য সমস্যা যা শুধু হৃদপিণ্ড নয়, অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গেও প্রভাব ফেলে। তাই, যদি কেউ হার্ট ফেইলিউরে আক্রান্ত হয়, তবে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা অত্যন্ত জরুরি। প্রতিনিয়ত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া এবং প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা রোগের অবস্থা পর্যবেক্ষণ এবং সম্ভাব্য জটিলতা প্রতিরোধে সহায়ক হতে পারে।

হার্ট ফেইলিউরের কারণে কিডনির ক্ষতি বা অক্ষমতা

হার্ট ফেইলিউর কিডনির ওপরও গভীর প্রভাব ফেলে। কারণ যখন হৃদপিণ্ড সঠিকভাবে কাজ করে না, তখন কিডনিতে পৌঁছানো রক্তের পরিমাণও কমে যায়। কিডনি শরীরের বর্জ্য পদার্থ এবং অতিরিক্ত পানি পরিষ্কার করতে সাহায্য করে, কিন্তু পর্যাপ্ত রক্তপ্রবাহ না থাকলে তাদের কার্যক্ষমতা হ্রাস পায়। এ কারণে কিডনির কার্যক্ষমতা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এবং দীর্ঘমেয়াদে কিডনি অক্ষমতা বা কিডনি ফেইলিউর হতে পারে।

যদি এই ধরনের জটিলতা দেখা দেয়, তবে ডায়ালাইসিস বা কিডনি প্রতিস্থাপন প্রয়োজন হতে পারে। তাই, কিডনি ফেইলিউরের ঝুঁকি এড়াতে রোগীকে রক্তচাপ এবং অন্যান্য সূচকগুলোর নিয়মিত পরীক্ষা করা প্রয়োজন।

হৃদপিণ্ডের আকার এবং কার্যকারিতায় পরিবর্তন

হার্ট ফেইলিউরের কারণে হৃদপিণ্ডের পেশীগুলো ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়ে, যা হৃদপিণ্ডের আকার এবং কার্যকারিতার পরিবর্তন ঘটাতে পারে। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদী প্রক্রিয়া, যেখানে হৃদপিণ্ডের প্রাচীর পুরু হয়ে যেতে পারে অথবা তা স্বাভাবিকের চেয়ে বড় হয়ে যেতে পারে। এই ধরনের পরিবর্তন হৃদপিণ্ডকে আরো দুর্বল করে দেয়, যার ফলে রক্ত পাম্প করার ক্ষমতা আরও কমে যায় এবং হৃদরোগের ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়।

হৃদপিণ্ডের আকারে পরিবর্তন এড়াতে এবং এর কার্যকারিতা উন্নত করতে নিয়মিত শারীরিক পরীক্ষা এবং চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ গ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

যকৃতের ক্ষতি

হার্ট ফেইলিউর শুধু কিডনি এবং হৃদপিণ্ডের আকারেই প্রভাব ফেলে না, এটি যকৃতেও মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে। যখন হৃদপিণ্ড সঠিকভাবে কাজ করতে পারে না, তখন শরীরের অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গে রক্ত প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়। এতে যকৃতের কোষে পর্যাপ্ত অক্সিজেন পৌঁছাতে সমস্যা হয় এবং লিভারের কার্যক্ষমতা ধীরে ধীরে হ্রাস পায়।

এই অবস্থায় যকৃতের ক্ষতি হলে শরীরে বিষাক্ত পদার্থ জমা হতে শুরু করে, যা আরও স্বাস্থ্য সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। যকৃতের কার্যক্ষমতা ঠিক রাখতে এবং যকৃতের ক্ষতি এড়াতে সময়মতো চিকিৎসা গ্রহণ করা এবং খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনা অত্যন্ত জরুরি।

হঠাৎ হৃদরোগজনিত মৃত্যু

হার্ট ফেইলিউর যদি সঠিকভাবে চিকিৎসা না করা হয়, তবে এটি হঠাৎ হৃদরোগজনিত মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়াতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে হৃদপিণ্ডের কার্যক্ষমতা হঠাৎ করেই থেমে যায়, যার ফলে রোগীর মৃত্যুর সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এই ধরনের হৃদরোগজনিত মৃত্যু হার্ট ফেইলিউরের চূড়ান্ত জটিলতা হিসেবে ধরা হয়, যা প্রায়ই আকস্মিকভাবে ঘটে এবং রোগীর জীবন হুমকির মুখে ফেলে।

এই জটিলতা এড়াতে হৃদযন্ত্রের নিয়মিত পরীক্ষা-নিরীক্ষা, চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে ওষুধ সঠিকভাবে গ্রহণ করা, এবং জীবনযাপনের ধরণে পরিবর্তন আনা প্রয়োজন।

প্রতিরোধ ও নিয়মিত পরীক্ষা

হার্ট ফেইলিউরের কারণে সৃষ্ট জটিলতা থেকে নিজেকে রক্ষা করতে নিয়মিত পরীক্ষা অত্যন্ত জরুরি। উচ্চ রক্তচাপ, কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখা, সঠিক খাদ্যাভ্যাস মেনে চলা এবং নিয়মিত ব্যায়াম করার মাধ্যমে হৃদপিণ্ডের স্বাস্থ্য বজায় রাখা সম্ভব। চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে জীবনযাপনে স্বাস্থ্যকর পরিবর্তন আনার মাধ্যমে হার্ট ফেইলিউরের ঝুঁকি কমানো যায়।

যদি আপনার হৃদযন্ত্রের কার্যক্ষমতা সম্পর্কে সন্দেহ থাকে বা হার্ট ফেইলিউরের ঝুঁকি থাকে, তবে সময়মতো চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া এবং নিয়মিত চেকআপ করানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।